ভূত চতুর্দশী কি? কেন খাওয়া হয় চৌদ্দ শাক?

ডিজি বাংলা ৩০ অক্টোবর ২০২৪: ভূত চতুর্দশী! শব্দটি শুনলেই কেমন যেন একটা গা ছমছম ভাব তৈরি হয়। মনের মধ্যে একটা ভয়ের উদ্রেক হয়। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। শাস্ত্রমতে এবছর ভূত চতুর্দশী শুরু হচ্ছে ১৩ কার্তিক,বুধবার ( ৩০/১০/২৪) দুপুর ১ টা ১৭ মিনিটে এবং চতুর্দশী শেষ হচ্ছে ১৪ কার্তিক, বৃহস্পতিবার(৩১/১০/২৪) অপরাহ্ন ৩ টে ৫৩ মিনিটে। এই সময়কালের মধ্যে ভূত চতুর্দশীর সমস্ত ক্রিয়াকর্ম সম্পন্ন করতে হবে।
এবারে আসা যাক ভূত চতুর্দশী কি এবং ভূত চতুর্দশী কেন পালন করা হয়? এ বিষয়ে বিভিন্ন পন্ডিতেরা বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। একটি পৌরাণিক মতানুসারে কার্তিক মাসের এই তিথিতে নরকাসুর বধ হয়েছিলেন এবং এই নরকাসুরকে বধ করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। নরকাসুর ছিলেন শিব ভক্ত। এই নরকাসুর চতুর্দশী তিথির রাত্রে অসংখ্য ভুত অনুচর সহ মানুষের কাছ থেকে পূজো গ্রহণের জন্য মর্তে আসে। এই নরকাসুরকে গৃহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না দেওয়ার জন্য চারিদিকে প্রদীপ জ্বালিয়ে বাধা সৃষ্টি করা হয়। অন্য আরেকটি মতে বলা হয় কালীপুজোর আগের রাতে আমাদের মৃত পূর্বপুরুষরা তাদের প্রিয়জনদের দেখতে মর্তে নেমে আসেন এবং বাড়ির আশেপাশে ঘোরাঘুরি করেন। আর এই ভূত চতুর্দশীর রাতে ১৪ টি প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির আশপাশ থেকে ভূত,প্রেত,দৈত্য,দানব এবং অশুভ শক্তিকে তাড়াবার জন্য এক ধরনের সুরক্ষাবলয় তৈরি করা হয়। পূর্বপুরুষদের আত্মাকে আলো দেখিয়ে কাছে আসতে সাহায্য করা হয়।
পাশাপাশি ভূত চতুর্দশীতে ১৪ রকমের শাক খাওয়ার একটা রীতি আছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই চৌদ্দ শাক খাওয়ার কারণটা কি? এর একটা বিজ্ঞানভিত্তিক কারণ আছে। বর্ষার এবং শরৎ মরশুম শেষ হয়ে আস্তে আস্তে ঠান্ডা পড়তে শুরু করে। এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শরীরের কিছু কিছু সমস্যা তৈরি হয়। শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ১৪ শাক। ১৪ শাক বলতে মূলত আমরা যে শাক গুলিকে বুঝি সেগুলি হচ্ছে সরিষা,কুমড়ো,হেলাঞ্চা,পলতা,শুলফা,ঘেটু,শুশুনি,কলমি,ওল,বেতো,কালকাসুন্দে,নোটে,নিম ও সজনে । এই সমস্ত শাক গুলি বিভিন্ন খনিজ দ্রব্যে ভরপুর এবং স্বাস্থ্যকর। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় এই শাক গুলি শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।