রাজ্য

জগদ্ধাত্রী আরাধনায় সেজে উঠেছে চন্দননগর এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকা

ডিজি বাংলা ৫ নভেম্বর ২০২৪: হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম ঐতিহাসিক শহর চন্দননগর। চন্দননগর শহরের নাম শুনলেই ফরাসিদের কথা মনে পড়ে। কিন্তু এখন চন্দননগর শহরের কথা আলোচনা করলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে জগদ্ধাত্রী’র মূর্তি।
বাংলায় জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন হয় নদীয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের হাত ধরে। পরবর্তীকালে জগদ্ধাত্রী পূজা চন্দননগর সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হলেও বিশ্বের দরবারে জগদ্ধাত্রী পূজার সর্বোচ্চ পরিচিতি পায় চন্দননগর যা জগদ্ধাত্রী পূজার পীঠস্থান কৃষ্ণনগরকেও পিছনে ফেলে দেয়।
চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজা প্রচলন নিয়ে দ্বিমত আছে।কেউ কেউ বলেন চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর স্থপতি হলেন নদীয়া রাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের ঘনিষ্ঠ দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। তিনি কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর আড়ম্বর এবং সমারোহ দেখে প্রভাবিত হন এবং চন্দননগরের তালপট্টিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন।
চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন নিয়ে আরোও একটি মত প্রচলিত আছে। সেখানেও কিন্তু রাজা কৃষ্ণচন্দ্র জড়িয়ে আছেন। মহারাজা কৃষ্ণ চন্দ্রের দেওয়ান ছিলেন দাতারাম সুর এবং এই দাতারাম সুরের বসতবাড়ি ছিল ভদ্রেশ্বরে। জনুশ্রুতি সেখানেই তিনি প্রথম জগদ্ধাত্রী পূজা শুরু করেন। সেখান থেকেই চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা হয়।
চন্দননগরের প্রাচীনতম পুজো হলো চাউল পট্টির জগদ্ধাত্রী পুজো। অন্যান্য পূজা গুলির মধ্যে অন্যতম হলো ময়দা পট্টির পূজা,মারোয়াড়ী পট্টির পূজা,কাপড় পট্টির পূজা প্রভৃতি। চন্দননগর এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকা নিয়ে বর্তমানে পূজার সংখ্যা প্রায় ১৫০ টির কাছাকাছি।
চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো আলোকসজ্জা। চন্দননগরের আলোক শিল্পীরা তাদের উদ্ভাবনী শক্তির মধ্য দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় আলোকসজ্জার মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরে যা দেখার আকর্ষণে লক্ষ লক্ষ মানুষ জগদ্ধাত্রী পূজা উপলক্ষে চন্দননগরে ভিড় জমায়। অসংখ্য বিদেশি পর্যটকও চন্দননগরে আসেন জগদ্ধাত্রী প্রতিমা এবং আলোকসজ্জা দেখতে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button