দেশ

কুম্ভ মেলায় মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা জানাচ্ছে না উত্তর প্রদেশ সরকার, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের

ডিজি বাংলা ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ : গতকাল বুধবার (২৯-০১-২০২৫) মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে গঙ্গা-যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থল প্রয়াগরাজে শাহী স্নানের সময় হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছেন বহু পুণ্যার্থী। সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা ৩০ কিন্তু বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি। উত্তরপ্রদেশ সরকারের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী এ বছর এই মৌনি অমাবস্যায় প্রায় ১০ কোটির বেশি মানুষ অমৃত স্নানের জন্য মেলা প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ এই বিপুলসংখ্যক মানুষের জমায়েত কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে সে বিষয়ে যোগী সরকারের অগ্রিম কোন ব্লু প্রিন্ট ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী প্রশাসনের তরফ থেকে দ্রুত স্নান পর্ব সেরে ফেলার জন্য স্নানরার্থীদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হতে থাকে। অনেকেই স্নানের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে কিন্তু প্রশাসনের তাড়াহুড়োয় তারা এগিয়ে যেতেই ব্যারিকেডের একাংশ ভেঙে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা এদিক ওদিক ছুটতে থাকে। এইরকম একটা অরাজক পরিস্থিতিতে প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায় এবং মানুষ ভারসাম্য হারিয়ে বালির উপরে পড়ে যেতে শয়ে শয়ে মানুষ তাদের উপর দিয়ে চলে যায়। মুহূর্তের মধ্যে দেখা যায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে অসংখ্য-মৃতদেহ। যোগী সরকারের অপদার্থতা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণেই এই নিরীহ মানুষ গুলির প্রাণ গেল বলে দাবি করছে বিরোধীপক্ষ। ঘটনার পর থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে বারবার ফোন করে বিস্তারিত তথ্য নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
উল্লেখ্য কুম্ভ মেলায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু এই প্রথম নয়। কুম্ভ মেলায় প্রথম দুর্ঘটনা ঘটে ১৮২০ সালে। সেবারে কুম্ভ মেলা হয়েছিল হরিদ্বারে এবং দুর্ঘটনায় চারশোর উপরে পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছিল।
১৯৫৪ সালে এই মৌনি অমাবস্যায় শাহী স্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা যায় কমপক্ষে ৫০০ জন পুণ্যার্থী। ১৯৮৬ সালে হরিদ্বার কুম্ভ মেলায় আবারও বিপর্যয়। মৃত্যু হয় ২০০ জন পুণ্যার্থীর। এরপর ২০০৩ সালে গোদাবরী তীরে নাসিকে অনুষ্ঠিত কুম্ভ মেলায় স্নানের সময় ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালে কুম্ভ মেলায় যাবার সময় এলাহাবাদ স্টেশনের ফুটব্রিজ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় ৪৩ জন পুন্যার্থীর। আর শেষ বিপর্যয় ঘটে গেল গতকাল। সরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ৩০ কিন্তু বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা শতাধিক হতে পারে এমনটাই জানা যাচ্ছে সংবাদ সূত্রে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button