জেলা

“বীরাঙ্গনা” পুরস্কারপ্রাপ্ত নাবালিকা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করল

ডিজি বাংলা ১১ ডিসেম্বর ২০২৪: মেয়েটির নাম যুথিকা(পরিবর্তিত), ভীমপুর থানার আমঝুপি গ্ৰামের ১৭ বছর বয়সী নাবালিকা এবারে খবরের শিরোনামে। এক বছর পূর্বেও সে খবরের শিরোনাম এসেছিল। নিজের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের বিয়ে আটকে সে একটা উদাহরণ তৈরি করেছিল। তার বয়স এখন ১৭ বছর। ১৬ বছর বয়সেই তার বাবা মা তাকে সাংসারিক জীবনে ঠেলে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু যুথিকা চাইছিল সে লেখাপড়া করে নিজের মতো নিজেকে তৈরি করে নিজের জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে বাড়িতে নিজের বিয়ের কথা শুনতেই তার মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
কিভাবে বাবা মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের বিয়ে আটকাবে সে ভেবেই পাচ্ছিল না। স্কুলের দিদিমণিদের সাথে আলোচনা করতে সে ভয় পাচ্ছিল। শেষমেষ সাহস করে সে এসব কথা নিজের বান্ধবীদের কাছে খুলে বলে। এরপর যুথিকা এবং তার বান্ধবীরা মিলে স্কুলের দিদিমণিদের একথা জানায়। নিজের ছাত্রীর মুখে এমন কথা শুনে তার বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা তার পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর স্কুলের শিক্ষিকারা দলবদ্ধ হয়ে যুথিকার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে অনুরোধ করে তার বিয়ে বন্ধ করার । শিক্ষিকাদের পরামর্শে যুথিকার বাবা-মা পিছিয়ে আসে তাদের সেই সিদ্ধান্ত থেকে।
যুথিকার এমন প্রতিবাদে মুগ্ধ হয় তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। যুথিকার এই সাহসিকতার স্বীকৃতি স্বরূপ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সম্মান জানানো হয় এবং তার হাতে “বীরাঙ্গনা” পুরস্কার এবং “উজ্জল কন্যাশ্রী” সম্মান পত্র তুলে দেওয়া হয়।সেই সাথে তাকে আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ৫০০০ টাকা উপহারস্বরূপ দেওয়া হয়।
যে মেয়ে নাবালিকা বিয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল সেই মেয়েই বাড়ির অমতে পালিয়ে বিয়ে করে করলো।যুথিকার এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে রীতিমত লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে স্কুলের।
কিছুদিন আগে কৃষ্ণনগরের ঝিটকিপোতা এলাকার এক সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়ে মারিয়াম খাতুন। সেও “বীরাঙ্গনা” পুরস্কার এবং “উজ্জ্বল কন্যাশ্রী” পুরস্কার লাভ করে। কিন্তু প্রশ্ন হল এভাবে তাদের সাহসিকতার সম্মান জানানো সত্বেও কেন তারা আবার সেই ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে?এর জন্য দায়ী কে? সমাজ,বিদ্যালয় না তার পরিবার না সে নিজেই? এটা নিশ্চয়ই ভাববার সময় এসেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button