কিছুতেই কাটছে না রাজ্য বিজেপির শনির দশা, সদস্য সংগ্ৰহে ব্যর্থ রাজ্য বিজেপি
ডিজি বাংলা ২০ ডিসেম্বর ২০২৪: বঙ্গ বিজেপিতে যেন শনির দশা চলছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক বিপর্যয়ের পর থেকে কোনভাবেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না বঙ্গ বিজেপি। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে আশাতীত সাফল্য লাভের পর বাংলা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেয়। তৃণমূলের অন্দরে নেতা-নেত্রীদের মধ্যে গদি হারানোর ভয় ধরে যায়। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ধীরে ধীরে বিশ্বাস করতে শুরু করেন এবারে হয়তো বিজেপি ক্ষমতায় এসে যেতে পারে।
অমিত শাহ রাজ্য নেতৃত্বকে ২০০ আসন জয়ের টার্গেট দেন কিন্তু ২০০ আসন স্পর্শ করাতো দূরের কথা, তার অর্ধেক আসনেও জিততে ব্যর্থ হয় বঙ্গ বিজেপির নেতারা। এরপর থেকে পশ্চিমবঙ্গে যে কটি নির্বাচন হয়েছে সব নির্বাচনেই মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপির ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন। এইরকম একটা পরিস্থিতিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে সংগঠনকে মজবুত করতে না পারলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা একপ্রকার অসম্ভব। আর সেই লক্ষ্য পূরনের উদ্দেশ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গ বিজেপি নেতাদের এটাই জানিয়েছেন যেভাবেই হোক সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। অমিত শাহ রাজ্যে বিজেপি নেতাদের সদস্য সংগ্ৰহের টার্গেট করে দিয়েছিলেন এককোটি কিন্তু এখনো পর্যন্ত নেতারা ৩০ লক্ষের গণ্ডি অতিক্রম করতে পারে নি।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিজেপির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সংগঠন দেখার দায়িত্বে রয়েছেন বিহার রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি মঙ্গল পান্ডে। গতকাল রাজ্য বিজেপি নেতাদের সাথে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মঙ্গল পান্ডে। আর সেই আলোচনা সভাতেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন মেম্বারশিপ সংগ্রহে রাজ্য বিজেপি সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। ঠারে ঠারে তিনি এ কথাও বুঝিয়ে দেন বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সংগঠনকে শক্তিশালী করতে গেলে সাংগঠনিক স্তরে রদবদল করা প্রয়োজন।
এই মুহূর্তে রাজ্য বিজেপির কোন স্থায়ী সভাপতি নেই। বিদায়ী সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি এই মুহূর্তে দলের সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন যতদিন না পর্যন্ত নতুন সভাপতি দায়িত্বভার নেবেন। কিন্তু কে হবেন পরবর্তী রাজ্য সভাপতি? এই মুহূর্তে রাজ্য স্তরে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের দ্বারা খুব বেশি কাজ হবে না সেটা বুঝতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবুও দলকে টিকিয়ে রাখতে গেলে রাজ্য সভাপতি পরিবর্তন অবশ্যই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কোন একজন মহিলা নেত্রীকে রাজ্যের সর্বোচ্চ দলীয় পদে বসানোর দিকে নজর রাখছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পাশাপাশি পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হিসেবে উঠে আসছে একজন রাজ্যসভার সদস্য এবং দুজন লোকসভার সদস্যের নাম। এখন দেখা যাক আগামী দিনে কার হাতে দায়িত্ব অর্পণ করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।