রাজ্য

ডঃ মনমোহন সিং না থাকলে হারিয়ে যেত “ইস্কো” এমনটাই মনে করছেন আসানসোলবাসী

ডিজি বাংলা ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪: ” ডঃ মনমোহন সিংহ না থাকলে ভারতবর্ষের শিল্প ক্যালেন্ডার থেকে হয়তো মুছে যেত আসানসোল,বার্নপুর শিল্পাঞ্চলের নাম” এমনটাই মনে করছেন আসানসোল,বার্নপুর শিল্পাঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ।
১৯১৮ সালে বাঙালী শিল্পপতি বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এবং ব্রিটিশ শিল্পোদ্যোগী মার্টিন বার্নের যৌথ উদ্যোগে বার্নপুরে গড়ে ওঠে ইন্ডিয়ান আয়রন এন্ড স্টিল কোম্পানি লিমিটেড যা আজ ইস্কো নামে সারা ভারতবর্ষে নয় সারা বিশ্বে পরিচিত। দীর্ঘ ৩০ বছর সুনামের সাথে এই লৌহ ইস্পাত কারখানাটি চলার পর ১৯৫০ সালের পর পরই এই কারখানার শনির দশা শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই সংকটজনক হয়ে পড়ে যে কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্য হয় এই কারখানাটি অধিগ্রহণ করতে। ১৯৭২ সালে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রক ইস্কো অধিকরণ করে। এরপর দুদশক অত্যন্ত সাফল্যের সাথে লৌহ ইস্পাত উৎপাদনে অন্যান্য সংস্থার সাথে প্রতিযোগিতা করে জোরকদমে এগিয়ে চলে এই প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ৯০ দশকের পর পরই আবার শুরু হয় এই কারখানার অধঃপতন। ধুঁকতে ধুঁকতে কারখানা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ২০০৩ সালে এই কারখানা থেকে ৩০০০ শ্রমিক স্বেচ্ছা অবসর নেয়। তারপরও ইস্কোকে কোনোভাবেই টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বার্নপুর আসানসোল শিল্পাঞ্চলের মানুষ ভেবেই নিয়েছিল ইস্কো কারখানাটি চিরতরে হারিয়ে যাবে এই পশ্চিমবঙ্গের বুক থেকে। ঠিক এইরকম একটা পরিস্থিতিতে ইস্কো বাঁচানোর জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভারতবর্ষের নব রূপকার ডঃ মনমোহন সিং। ২০০৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রের রাসায়নিক সার ও ইস্পাত মন্ত্রী রাম বিলাস পাসোয়ান,তৎকালীন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সিকে পাশে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইস্কো চলে যায় সেইল এর অধীনে। এই ঘটনা আসানসোল বার্নপুর শিল্পাঞ্চলের মানুষের কাছে আজও স্বপ্ন বলে মনে হয়। স্বল্পবাক, মৃদুভাষী এই মানুষটি সব সময় রাজনীতির উর্ধ্বে দাঁড়িয়ে দেশের উন্নয়নের কথা ভাবতেন এমনটাই মনে করেন আসানসোলবাসী। এমন একজন দেশ হিতৈষী রাজনীতিবিদের প্রয়াণে অনেকেরই চোখের পাতা ভিজে উঠেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button