কলকাতা শহরের ট্রামের ভবিষ্যৎ আপাতত সুপ্রিম কোর্টের হাতে
ডিজি বাংলা ৫ মার্চ ২০২৫: কলকাতা শহরের অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল ট্রাম। কিন্তু কালের নিয়মে এবং আধুনিক গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারার কারণে কলকাতা থেকে ট্রাম ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে। এখনও যা দুই একটি ট্রাম লাইন আছে তাও আগামী দিনে থাকবে কিনা সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
১৮৭৩ সালে কলকাতা শহরে প্রথম ট্রাম চালানো শুরু হয় এবং এই ট্রাম চালানোর দায়িত্ব ছিল ক্যালকাটা ট্রাম ওয়েজ কোম্পানি নামে একটি লন্ডন ভিত্তিক সংস্থার হাতে। প্রথম ট্রাম রুটটি ছিল আর্মেনিয়ান ঘাট থেকে শিয়ালদা পর্যন্ত এবং এই রুটের দূরত্ব ছিল ৩.৯ কিলোমিটার। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে ট্রাম রুটের এলাকা বৃদ্ধি হতে থাকে এবং স্বল্প মূল্যে যাতায়াতের একটি মাধ্যম হিসেবে ট্রাম কলকাতাবাসীর কাছে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯০২ সালে সর্বপ্রথম শুধু ভারত বর্ষ নয় সমগ্র এশিয়া ভূখণ্ডে বিদ্যুৎ চালিত ট্রাম চালাতে শুরু করে ক্যালকাটা ট্রাম ওয়েজ কোম্পানি।
কিন্তু ট্রাম পরিবেশ বান্ধব যানবাহন হলেও স্বল্প গতি সম্পন্ন হওয়াই শহরে যানজট বেড়ে যাচ্ছে এই কারণ দেখিয়ে কলকাতা শহর থেকে ধীরে ধীরে ট্রাম সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে কলকাতা শহরে গড়ে ওঠে কলকাতা ট্রাম লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন যারা বিভিন্ন সময় কলকাতার বুকে ট্রাম বাঁচিয়ে রাখার জন্য আন্দোলন শুরু করে। এই সংস্থার সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় আপাতত ট্রাম লাইন বুঝিয়ে ফেলার কাজ বন্ধ রাখতে হবে। উচ্চ আদালতের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়। আপাতত বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন।সুতরাং আগামী দিনে কলকাতা ট্রামের ভাগ্য কি হবে সেটা নির্ধারণ করবে সুপ্রিম কোর্ট।