জেলা

বারোয়ারি এবং পারিবারিক মিলিয়ে প্রায় দুশোর বেশি পুজো হয় নদীয়ার কালীগ্রাম বেলপুকুরে।

ডিজি বাংলা ২৯ অক্টোবর ২০২৪: নদীয়া জেলার সদর মহকুমা শহর কৃষ্ণনগর থেকে মাত্র ১৭ কিমি  দূরে ধুবুলিয়া থানার অন্তর্গত গ্রাম বেলপুকুর বা বিল্বপুষ্করিণী। কথিত আছে এই গ্রামের বাচস্পতি পাড়াতে জন্মেছিলেন শ্রীচৈতন্য মাতা শচীদেবী। অর্থাৎ বেলপুকুর ছিল নিমাইয়ের মাতুলালয়। বাল্যকাল থেকেই এই বেলপুকুর গ্রামে যাতায়াত ছিল মহাপ্রভুর। বৈষ্ণবধর্ম প্রচারে মহাপ্রভু এই বেলপুকুর গ্রামে আসেন এবং বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার করেন। সেই সময় নদীয়ার রাজা ছিলেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের প্রপিতামহ রুদ্র রায়। নদিয়ার রাজারা ছিলেন মূলত শাক্ত ধর্মাবলম্বী। নদীয়াতে বৈষ্ণব ধর্ম ধীরে ধীরে যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন কিভাবে বৈষ্ণব ধর্মের এই প্রসার রোধ করা যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন রাজা রুদ্ররায়। তিনিই প্রথম রামচন্দ্র ভট্টাচার্য নামে এক শক্তি সাধককে পূর্ব বাংলার ঢাকা থেকে এই বেলপুকুর গ্রামে নিয়ে নিয়ে আসেন। তাকে নিষ্কর জমি দান করেন এবং এই রামচন্দ্র ভট্টাচার্যের মাধ্যমে তিনি বেলপুকুর গ্রামে কালীপুজোর আয়োজন করেন। এভাবেই নাকি এই গ্রামে শক্তি সাধনা এবং কালীপুজোর প্রচলন শুরু হয়।সেই সময় থেকেই বেলপুকুর গ্রামের কালি পূজোর খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য একটি ধারণাও প্রচলিত আছে। কেউ কেউ মনে করেন এই গ্রামে প্রথম কালীপুজোর প্রচলন করেন ‘বৃহৎ তন্ত্রসার’ গ্রন্থের রচয়িতা সে যুগের বিশিষ্ট কালীসাধক ও তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ। বেলপুকুরের মানুষ যতটা না আনন্দ করে দুর্গা পুজোয় তার থেকেও বেশি আনন্দ করে কালীপুজোর।প্রায় ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে নদীয়ার এই গ্রামে কালী পুজো হচ্ছে। বর্তমানে এই গ্রামে বারোয়ারি এবং পারিবারিক মিলিয়ে মোট প্রায় ২০০টির অধিক কালীপুজো হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button