অভিষেকের প্রস্তাবে সীলমোহর দিলেন তৃণমূল নেত্রী, এ মাসেই হবে সাংগঠনিক রদবদল

ডিজি বাংলা ১৪ নভেম্বর ২০২৪: সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের সংগঠনকে একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নতুন করে সাজাবেন। সম্প্রতি এই প্রস্তাব তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেও জমা দিয়েছেন। সংবাদ সূত্রের খবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই প্রস্তাব এক বাক্যে মেনে নিয়েছেন এবং সংগঠনের খোলনলচে বদলে ফেলার সবুজ সংকেত দিয়েছেন। আর এই সিদ্ধান্ত কবে কার্যকরী হবে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতা-নেত্রী এবং কর্মী সমর্থকরা। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে ২৩ নভেম্বর রাজ্যের ছটি উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সাংগঠনিক পরিবর্তনের কাজে হাত লাগাবেন।
কৃষ্ণনগর শহরে এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন স্থায়ী সভাপতি নেই। বিদায়ী সভাপতি মলয় দত্ত বর্তমানে পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্য। এই মুহূর্তে শহরের দলীয় কাজকর্মের দেখভাল করছেন জেলার সভাপতি ও সাংসদ মহুয়া মৈত্রের আস্থাভাজন জনৈক যুবনেতা। পৌরসভার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলর রিতা দাস। এই মুহূর্তে পৌরসভার অভ্যন্তরে কাউন্সিলরদের মধ্যে পৌর প্রধানের বিরুদ্ধে প্রবল অসন্তোষ। অধিকাংশ কাউন্সিলার রিতা দাসের বিপক্ষে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী যে সমস্ত পৌরসভায় ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে দল জিততে পারেনি সেই সমস্ত পৌরসভার চেয়ারম্যান-শিপে পরিবর্তন আনা হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার সাথে সাথেই নতুন করে ঘুটি সাজাতে শুরু করেছে রিতা দাস বিরোধী কাউন্সিলরদের একাংশ।কৃষ্ণনগর পৌরসভায় মোট আসন সংখ্যা ২৫, ২০২২ সালের পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে জয় লাভ করে ১৬ জন কাউন্সিলর। চারজন কাউন্সিলর জয়ী হয় কংগ্রেসের প্রতীকে,একটি আসন পায় বিজেপি এবং বাকি চারজন নির্দল কাউন্সিলর জয় লাভ করে। পরবর্তীতে চারজন নির্দল সহ দুজন কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগদান করে।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মহুয়া মৈত্র বিপুল ভোটে পিছিয়ে পড়ে বিজেপি প্রার্থী রাণীমা অমৃতা রায়ের থেকে। একমাত্র সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ১৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া আর প্রতিটি ওয়ার্ডেই তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক ভোটে হেরে যায়। বিশেষ করে বর্তমান পৌর প্রধান,প্রাক্তন পৌর প্রধান, উপ পৌর প্রধান এবং যে সমস্ত কাউন্সিলররা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের দায়িত্বে আছেন সেই সমস্ত ওয়ার্ডেই বেশি ভোটে দল পিছিয়ে পড়ে।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বের হতেই দলের অভ্যন্তরে শুরু হয়ে যায় তীব্র অসন্তোষ। চাপে পড়ে পদত্যাগ করেন শহর সভাপতি। ফলে শহরে কোন স্থায়ী সভাপতি নেই। সংগঠন চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এমতাবস্থায় সংগঠনিক পরিবর্তন না হলে কৃষ্ণনগর শহরে দল যে আগামী দিনে কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করবে না সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
২০২৪ এর লোকসভা ভোটের ফলাফলের মার্কশিট হাতে নিয়েই কৃষ্ণনগরের সাংগঠনিক পর্যালোচনা শুরু করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।