আবারও উদ্বাস্তু হবার পথে বাংলাদেশের বাঙালি হিন্দুরা
ডিজি বাংলা ৪ ডিসেম্বর ২০২৪: ওপারের বাঙালি হিন্দু কি এভাবেই বারংবার উদ্বাস্তু হবে? ১৯৪৭ এ দেশ ভাগের সময় কয়েক কোটি বাঙালি হিন্দু তাদের পিতৃ পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিম বাংলায় চলে আসতে বাধ্য হয়। দেশ ভাগের যন্ত্রণা নিয়ে ওপার বাংলায় রয়ে যায় অসংখ্য অসহায় বাঙালি হিন্দু, কারণ তারা ছাড়তে পারেনি বাপ-ঠাকুরদার জমিজমা বসত বাড়ি। মুসলমানদের অন্যায়, অত্যাচার, নিপিড়ন সহ্য করে সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে তারা সেখানে কোন রকমে টিকে থাকে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। অসংখ্য বাঙালি হিন্দু সেদিনের সেই স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, রুখে দাঁড়িয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার আর বাংলাদেশী রাজাকারদের বিরুদ্ধে। তারা ভেবেছিল এবার থেকে তাদের আর উদ্বাস্তু হবার ভয়ে দিন গুনতে হবে না। কিন্তু বাস্তবটা হলো অন্যরকম। শুরু হল দুর্গাপুজোর উপর আক্রমণ। হিন্দু মন্দির, মূর্তি, মন্ডপ ভাঙ্গার কাজ হয়ে দাড়ালো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। প্রতিবাদ করলেও কোনো প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়া যেত না। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে ওপার বাংলা যাকে আমরা বাংলাদেশে বলে মানচিত্রে দেখতে পাই সেই দেশে হিন্দুরা বিশেষ করে বাঙালি হিন্দুরা তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসাবে দিন যাপন করতে লাগলো।
গত জুলাই মাস থেকে সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হলো সরকার বিরোধী আন্দোলন। সেই আন্দোলন এমন পর্যায়ে পৌঁছালো যে দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন। শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং নির্বাচিত সরকারের অনুপস্থিতিতে সারা দেশ জুড়ে শুরু হলো সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ। শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উপর আক্রমণই নয় পাশাপাশি শুরু হলো জোর করে কর্মচূত্য করা। হিন্দু অধ্যাপক, শিক্ষক থেকে শুরু করে হিন্দু সরকারি কর্মচারীদের বাধ্য করা হলো পদত্যাগ করতে।
ভারতের হাত ধরে স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশ আজ চরম ভারত বিরোধী। ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ। লুকিয়ে চুরিয়ে ভারতে এলেও চিহ্নিত হবে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে। তাহলে কি হবে বাংলাদেশে বসবাসকারী বাঙালি হিন্দুদের ভবিতব্য? এই প্রশ্নটাই আজ ঘুরে বেড়াচ্ছে সর্বত্র।