তেহট্টের গ্ৰামীণ অর্থনীতির দিশা দেখাচ্ছে খাসপুর জাগরণী সমবায় ব্যাঙ্ক
ডিজি বাংলা ১৩ মার্চ ২০২৫: গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। নদীয়া জেলায় এই মুহূর্তে প্রায় তিন শতাধিক সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি বা সমবায় ব্যাঙ্ক আছে। এই সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এবং স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে চলেছে তেহট্ট ব্লকের খাসপুর জাগরণী সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিঃ। কৃষ্ণনগর করিমপুর রোড থেকে বাঁদিকে জলঙ্গি নদীর নিকট মনোরম পরিবেশে ১৯৬৩ সালের ২১ শে মে স্থানীয় কিছু মানুষের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছিল এই সমবায় সমিতি বা সমবায় ব্যাঙ্ক। প্রতিষ্ঠাকালে এই সমবায় ব্যাঙ্কের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ২৫ জন। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ২১০০ জন এবং মোট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজারের কাছাকাছি। এই ব্যাঙ্কের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকার অধিক। এই ব্যাঙ্ক কি কি কাজ করে এই বিষয়ে ব্যাঙ্কের বর্তমান ম্যানেজার আশিস কুমার ঘোষ কে প্রশ্ন করা হলে তিনি ডি জি বাংলার প্রতিনিধি কে বলেন,”আমাদের এই সমবায় ব্যাঙ্ক সমস্ত রকমের ডিপোজিট নেয়। এখানে ফিক্সড ডিপোজিট, টার্ম ডিপোজিট এবং ডেইলি ডিপোজিট বা দৈনিক জমা প্রকল্প আছে। আধুনিক ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সমস্ত রকম সুবিধা এখানে পাওয়া যায়। সেভিংস আ্যকাউন্ট, কারেন্ট আ্যকাউন্ট,এনইএফটি, আরটিজিএস সহ মানি ট্রান্সফারের সমস্ত রকমের ব্যবস্থা আছে।” কয়েকজন গ্রাহকের সাথে কথা বলে জানা গেল এই ব্যাঙ্কের পরিষেবায় তারা ভীষণ খুশি, বিশেষ করে কৃষি লোনের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের কর্মচারীরা কৃষকদেরকে সমস্ত রকমের সাহায্য করে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন এবং সেক্ষেত্রে এই সমবায় ব্যাঙ্ক কি ধরনের কাজ করে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ব্যাঙ্কের তরফ থেকে বলা হয় বর্তমানে এই ব্যাঙ্কের অধীনে প্রায় ১৮৬ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে এবং এই গোষ্ঠীগুলোকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি টাকার কাছাকাছি।
আগামী দিনে ব্যাঙ্ক আর কি কি পরিকল্পনা গ্রহণ করছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বলেন,” আমরা রাজ্য সরকারের সমবায় দপ্তর থেকে ২৭ লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছি। এই সমবায়ের লাগোয়া জমিতে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে আগামী দিনে কৃষকদের স্বার্থে সরকারি মূল্যে সার, বীজ এবং কৃষি যন্ত্রপাতি যাতে কৃষকরা আমাদের মাধ্যমে পায় তার ব্যবস্থা করা।”
এই সমবায় সমিতি সম্পর্কে স্থানীয় মানুষজনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা কমবেশি সকলেই বলেন এই সমবায় ব্যাঙ্ক থাকার কারণে এলাকার মানুষের ভীষণ সুবিধা হয়েছে বিশেষ করে চাষীদের। এত স্বল্প সুদে কৃষি লোন পাওয়া যায় সেটা এই সমবায় সমিতি না থাকলে এলাকার কৃষকরা কোনদিন জানতেই পারত না। আপনাদের সমবায়ে গ্রাহকরা প্রতিদিন যে টাকা জমা করছে বা বিভিন্ন প্রকল্পে গচ্ছিত রাখছে সেই টাকা কতটা নিরাপদ? এই প্রশ্নের উত্তরে ম্যানেজার আশিস কুমার ঘোষ বলেন,” আমাদের সমবায় সমিতির টাকা সম্পূর্ণ নিরাপদ। আমাদের এই সমবায়ের টাকা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্ক সহ কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে রাখা আছে। গ্রাহকরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। তাদের জমানো টাকা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।”