শীতের শুরুতেই খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত নদীয়ার চাষীরা

ডিজি বাংলা ১৪ নভেম্বর ২০২৪: কার্তিক মাস শেষ হতে চলল। অগ্রহায়ণ মাস এসে দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে বাংলায় প্রবেশ করবে বলে। শীতের হিমেল হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। ভোরের দিকে হালকা কুয়াশা। গ্রামের চাষিরা এখন ব্যস্ত খেজুর গাছ কাটার কাজে। নদীয়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার একটি অর্থকরী উৎপাদন হলো খেজুর রস যা থেকে তৈরি হয় উৎকৃষ্ট মানের খেজুর গুড়। নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক,চাপড়া ব্লক,তেহট্ট ব্লক, কালিগঞ্জ এবং নাকাশিপাড়া ব্লক খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত।
শীতে পড়তেই শুরু হয়ে যায় খেজুর গাছ ঝোড়ার পালা অর্থাৎ গাছের কিছু “বেগো” (খেজুর গাছের ডাল কে “বেগো” বলা হয়) কেটে ফেলে গাছের একটা অংশকে পরিষ্কার করা হয়। তীক্ষ্ণধার সম্পন্ন হাশুয়া জাতীয় কাটারি দিয়ে গাছের উপরে এই অংশটা খুব ভালোভাবে মসৃণ করতে হয়। এরপর বাঁশের কঞ্চি কেটে নলি বানানো হয়। নলি বসিয়ে সেখানে মাটির হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করা হয়। এভাবেই সংগৃহীত রস বড় বড় মাটির জ্বালা অথবা টিনের তাওয়াতে জ্বালানোর পরে গুড় তৈরি করা হয়। নদীয়া জেলার খেজুর গুড়ের সুখ্যাতি পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে গেছে। অথচ আশ্চর্যের বিষয় এই খেজুর গুড়ের চাষ সম্পর্কে রাজ্যের কৃষি বিভাগ সম্পূর্ণ উদাসীন। খেজুর গুড় চাষিরা আদৌ কোন সরকারি সহায়তা পায় না বা এই শিল্পকে উন্নত করবার জন্য সরকারের কোন সদিচ্ছাও লক্ষ্য করা যায় না। বিক্ষিপ্তভাবে স্থানীয় কিছু মানুষ তাদের নিজের নিজের জায়গায় খেজুর গুড়ের ব্যবসা কে বাঁচিয়ে রেখেছে। নদীয়ার খেজুর গুড় চাষের সাথে যুক্ত চাষীদের সাথে কথা বলে যা বোঝা গেল তাতে করে সরকার যদি বিশেষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে এই খেজুর গুড় শিল্প অচিরেই নদীয়া থেকে বিলুপ্ত হবে।