ডিজি বাংলা ৩১ জানুয়ারি ২০২৫: নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থাপনার প্রশ্নে ডাহা ফেল উত্তর প্রদেশ প্রশাসন। ১৪৪ বছর পর গঙ্গা-যমুনা আর অন্তঃসলিলা সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থল অর্থাৎ ত্রিবেণী সঙ্গমে এই বছরে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভের অমৃত স্নান। কোটি কোটি মানুষের সমাবেশ ঘটেছে এই কুম্ভ মেলার পবিত্র অঙ্গনে। মহাপুণ্য লাভের আশায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোটি কোটি মানুষ ছুটে এসেছে এই ত্রিধারার মিলন ময়দানে।
অথচ সেই মহামিলনের ময়দানে ঘটে গেল এক বীভৎস্য, পৈশাচিক ঘটনা। গত ১৯শে জানুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণে প্রথম আগুন লাগে, প্রায় দ্বিশতাধিক তাবু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তারপরও হুশ ফেরেনি মেলার ব্যবস্থাপকদের। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা। প্রশাসনের সর্বোচ্চ আধিকারিক থেকে শুরু করে পুলিশের লোকজন যত না সাধারণ মানুষের সুবিধা অসুবিধার দিকে নজর দিয়েছে, তার থেকে বেশি নজর দিয়েছে মেলায় আসার রাজনৈতিক ভিআইপি এবং তার আত্মীয়-স্বজনদের নিরাপত্তা এবং স্নানের পথ সুগম করার কাজে। ফলে পরিস্থিতি যা হবার তাই হয়েছে। দুর্বল ব্যবস্থাপনা, অনিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে ঘটে গেছে বিরাট দুর্ঘটনা। সেই দুর্ঘটনায় পদপিষ্ঠ হয়ে মারা গেছে সরকারি মতে ৩০ জন কিন্তু বেসরকারি মতে সংখ্যাটা কত সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে বিভিন্ন সংবাদ সূত্র অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে একশোর নিচে নয়।
বাংলা থেকে যাওয়া পুণ্যার্থীদের মধ্যে তিনজন মৃত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। কলকাতার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী বাসন্তী পোদ্দার, পশ্চিম মেদিনীপুরের উর্মিলা ভূইয়া এবং পশ্চিম বর্ধমানের বিনোদ রুইদাস। ৭৫ বছর বয়সি উর্মিলা ভূঁইয়া পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কুম্ভ মেলায়। নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে ৬ জনের নাম। তারা হলেন কলকাতার বাসিন্দা সুবীর নস্কর, পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা পবন জানা, মালদার বাসিন্দা অনিতা ঘোষ, বীরভূমের বাসিন্দা অসিত কুমার রায়, দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা পুতুল রায় এবং উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা সুনিতা মন্ডল।
এত বড় একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও ভারতবাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলো যোগী সরকার এই দুর্ঘটনাকে গুরুত্ব না দিয়ে হেলিকপ্টার থেকে গোলাপের পাপড়ি পুণ্যার্থীদের মাথার উপরে বর্ষণ করে প্রমাণ করতে চাইলেন ৩০ জনের(যোগী প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী)মৃত্যু সামান্য ঘটনা।
